১. ট্রিপল জাম্প : হপস্টেপ এন্ড জাম্প বা লাফ ঝাঁপ ধাপ অর্থাৎ এই তিনের সমন্বয়ে যে লাফ দেওয়া হয় তাকে ট্রিপল জাম্প বলে। যে পায়ে টেক অফ সে পায়ে প্রথমে হপ, বিপরীত পায়ে স্টেপ ও তার পরে লাফ দিতে হয়। এই ইভেন্টে তিনটি লাফই সমান গুরুত্ব বহন করে। এই তিনটি জাম্পের মধ্যে অনুপাত হিসেব করে লাফ দিলে অনেক বেশি দূরত্ব অতিক্রম করা যায়। সাধারণত ৬ : ৫ : ৬ অনুপাত নতুন অ্যাথলেটদের জন্য সুবিধাজনক। প্রথম হপ ৬⁄ হলে স্টেপ নিতে হবে ৫⁄ এবং শেষে লাফ দিতে হবে ৬⁄ । প্রথমে বাম পায়ে টেক অফ নিলে সেই পায়ে হপ দিয়ে ডান পায়ে স্টেপ নিয়ে তারপর জাম্প দিতে হবে।
অ্যাপ্রোচ রান : দীর্ঘলাফের মতো দৌড়িয়ে আসতে হয়। দৌড়ের গতি এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে যেন মাটি ছাড়ার সময় দৌড়ের গতি বেশি থাকে ।
টেক অফ : দীর্ঘলাফ ও ট্রিপল জাম্প এর টেক অফ এক নয়। ট্রিপল জাম্পের মাটি ছাড়ার সময় চেষ্টা থাকে যে, কীভাবে সামনের দিকের গতি বজায় রাখা যায়। প্রথম হপ খুব উঁচু করে নেওয়া ঠিক নয়। স্বাভাবিক হপ নিয়ে ক্রমান্বয়ে উঁচুতে উঠলে লাফটি ভালো হয়। হপ দিতে যে উচ্চতা নিতে হবে স্টেপ তা থেকে বেশি উচ্চতায় নিতে হবে। তা থেকেও বেশি উচ্চতায় লাফ দিতে হবে।
মাটির উপরে শূন্যে ভাসা : দীর্ঘলাফের সময় শূন্যে যেভাবে পায়ের নড়াচড়া করতে হয় এখানেও সেভাবে পায়ের নড়াচড়া করতে হবে তাহলে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করা যাবে।
ল্যান্ডিং : দীর্ঘলাফের ল্যান্ডিং-এর কৌশল ও ট্রিপল জাম্পের ল্যান্ডিং-এর কৌশল একই ।
নিয়মাবলি
১. যদি ৮ এর অধিক প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে সেক্ষেত্রে ৩টি লাফের পর ৮ জনকে বাছাই করে ঐ আটজন আরও তিনটি করে লাফ দিবে। এই ছয় লাফের ভিতর যার দূরত্ব বেশি হবে সে বিজয়ী হবে।
২. লাফ দেওয়ার সময় টেকঅফ বোর্ডের সামনের যে বালির দেয়াল দেওয়া আছে তা ভেঙ্গে ফেললে ঐ লাফটি বাতিল হবে।
৩. অ্যাপ্রোচ রানের সময় দৌড় পথে কোনো চিহ্ন দেওয়া যাবে না।
৪. হাতে, পায়ে, কোনো ওজন বা গ্রিপ নিয়ে লাফ দেওয়া যাবে না ।
৫. লাফ দেওয়ার সময় অপর পা মাটিতে স্পর্শ করলে ঐ লাফটি বাতিল হবে।
২. পোলভন্ট বা দণ্ড লাফ : পোল-এর উপর ভর দিয়ে যে লাফ দেওয়া হয় তাকে পোলভল্ট বা দন্ডলাফ বলে।
প্রতিযোগিতার নিয়ম
১. প্রতিযোগিতা শুরু করার আগে উচ্চতা সম্পর্কে প্রতিযোগীদের অবহিত করবেন এবং প্রতি রাউন্ড শেষে কতটুকু উচ্চতা বাড়ানো হবে তাও বলে দেবেন
২. প্রতি রাউন্ড শেষে ক্রসবার কমপক্ষে ৫ সেমি উপরে উঠবে।
৩. লাফ দেওয়ার সুবিধার জন্য প্রতিযোগীগণ বক্সের ভিতরের ধার থেকে রানওয়ের দিকে ০.৪ মিটার ও পিটের দিকে ০.৮ মিটার পর্যন্ত পোস্টদ্বয় সরাতে পারবেন।
৪. প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেলে অনুশীলনের জন্য লাফের স্থান ব্যবহার করা হয় না।
৫. একজন প্রতিযোগীর লাফ কখন ব্যর্থ হবে-
ক. দু'পা শূন্যে উঠে গেলে ৷
খ. যদি লাফের পর ক্রসবার পড়ে যায়।
গ. যদি ক্রসবারের সামনের ভূমি স্পর্শ করে।
ঘ. যদি লাফ না দিয়ে দণ্ড দিয়ে ক্রসবার ফেলে দেয়।
ঙ. যদি লাফের সময় দণ্ড ধরা অবস্থায় নিচের হাত উপরের হাতের উপরে নেয় বা দুই হাত পরিবর্তন করে বেয়ে বেয়ে উপরে উঠার চেষ্টা করে।
৬. একজন প্রতিযোগী এক উচ্চতায় তিনটি করে লাফ দেওয়ার সুযোগ পাবে।
৭. পোল ভালো করে ধরার জন্য হাতে যে কোনো ধরনের পদার্থ লাগাতে পারবে।
৮. লাফ দেওয়ার সময় দণ্ডটি ভেঙ্গে গেলে পুনরায় লাফ দেওয়ার সুযোগ পাবে।
৯. টাই হলে উচ্চতার টাই ভাঙ্গার নিয়ম অনুসারে টাই ভাঙতে হবে।
১০. রানওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ৪০ মি প্রস্থ হবে ১.২২ মিটার।
১১. ল্যান্ডিং-এর মাপ হবে দৈর্ঘ্য ৫ মি, প্রস্থ ৫ মিটার ।
১২. প্রত্যেক প্রতিযোগী নিজ নিজ দণ্ড ব্যবহার করবে।
কৌশল
পোল তিনভাবে ধরা যায়-
১. উঁচু করে বহন করা, ২. মধ্যমভাবে বহন করা, ৩. নিচুভাবে বহন করা ।
কোনো প্রতিযোগী কীভাবে দণ্ড ধরবে তা তাদের উচ্চতা ও অনুশীলনের উপর নির্ভর করে। যে যেভাবেই ধরুক বক্সে দন্ডের গোড়া ঢুকিয়ে লাফ দিতে হবে।
লাফ দেওয়ার ৬টি ধাপ-
১. রানওয়ে দিয়ে দৌড়ে আসা
২. পোল ঠিকমতো বক্সে প্রেস করা
৩. ঠিকমতো টেক অফ নেওয়া
৪. পোলে ভর দিয়ে উপরে উঠা
৫. বারের উপর শরীর দোল খাওয়ানো
৬. পোল ছাড়া ও শরীর ঘুরিয়ে ল্যান্ডিং করা